জন্ডিস এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ (Homeopathic treatment of Jaundice:)
জন্ডিস এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
জন্ডিস আসলে কোন রোগ নয় এটা অন্য রোগের লক্ষণ মাত্র। সাধারণত পানির
কারনে এই রোগ বেশী দেখা দেয় আবার কিছু ভাইরাস আছে যার ফলেও জন্ডিস দেখা দেয়। রক্তে
যদি বিলুরুবিন এর পরিমান বেড়ে যায় তাহলে তাকে জন্ডিস বলে। রক্তে বিলুরুবিন এর স্বাভাবিক
মাত্রা হচ্ছে ০.২ থেকে ১.২ মিলি গ্রাম/ডেসি লিটার।
জান্ডিসের লক্ষণ কি?
পিত্ত থলি হতে পিত্ত বাহির হয়ে কোন কারণে অন্ত্রে যাইতে না পারেলে
রক্তে মিশে চক্ষু,মুত্র,হাত,পা হলুল বর্ণ ধারণ
করে,বমিবমি ভাব,অরুচী,দুর্বলতা,পেট ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
জন্ডিস কেন হয় ?
বিভিন্ন কারনে জন্ডিস হতে পারে যেমন, অতিরিক্ত এ্যালকোহল সেবন,ভাইরাস
এর আক্রমন,অতিরিক্ত মাত্রায় বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবন,পিত্ত নালিতে পাথর হলে,ম্যালেরিয়া
হলে,দুষিত পানি পান করলে,অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া ইত্যাদি। তবে হোমিওপ্যাথিক
ঔষধ এর মাধ্যমে জন্ডিস নিরাময় করা যায়।
জন্ডিস এর হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সমুহ লক্ষণ সহ দেওয়া হলঃ
চেলিডোনিয়াম : মুখের স্বাধ তিক্ত,জিহ্বায় হরিদ্রা বর্ণের ময়লা,চোখ,মুখ,গায়ের চামড়া হলুদ,পায়খানা ছাই বা মাটির মত রং মাঝেমাঝে গন্ধকের মত ক্ষুধাহীনতা,গা বমিবমি ভাব পিত্ত বমি হয়। শক্তি মাদার ৩-৪ ফোটা দিনে ৪ বার সামান্য পানিসহ।
মাইরিষ্টীকা : চোখ হরিদ্রা বর্ণ,জিহ্বায় হলদে ময়লা প্রলেপ,প্রস্রাব হলুদ বা ঘোলা,ঘুমঘুম ভাব,মুখমন্ডল হলুদ বর্ণ,নবজাত শিশুর জন্ডিসে অতি ফলপ্রদ, শক্তি মাদার ১-৪ ফোটা বয়স অনুপাতে ৩ বার।
হাইড্রসটিস : নতুন বা পুরাতন জন্ডিসে অব্যর্থ,চক্ষু,চর্ম,প্রসব,হলুদ মুখে অরুচী,জিহ্বা শ্বেতবর্ণ মাঝেমাঝে বমি বমি ভাব। শক্তি মাদার ৩-৪ ফোটা দিনে ৪ বার সামান্য পানি সহ। ২-৩ এক্স আরো উপকারী।
কার্ডুয়াস মেরি : হলুদ বর্ণের গাঢ় অল্প প্রস্রাব,চক্ষু হলুদ ,মুখের স্বাধ তিক্ত,মাঝেমাঝে বমি,কোষ্টকাঠিন্য মল গাটগাট,মাঝেমাঝে উদরাময়,লিভারের স্থানে টাটানি ব্যথা,ডান দিকে চাপিয়া শুইতে পারেনা। মাদার ৩-৪ ফোটা দিনে ৪ বার সামান্য পানিসহ।
ইলাটিরিয়ম : সদ্য প্রসূত নবজাতক শিশুর পিত্তভেদ চক্ষু প্রস্রাব হলুদ বর্ণ বমি ইত্যাদি জন্ডিসের লক্ষণে উপকারী। শক্তি ৩ এক্স বা ৬ দিনে ৪ মাত্রা।
নাক্স-ভুমিকা : অতিরিক্ত কুইনাইন সেবন জনিত কারণে জন্ডিস পীড়া হইলে নাক্স অধিক ভূমিকা পালন করে । শক্তি ৩ এক্স
৪ ফোটা সামান্য ঠান্ডা পানি সাথে মিশিয়ে ৪ বার সেব্য।
কোলোষ্ট্রীনামঃ এই ঔষধটি জান্ডিস রোগের ক্ষেত্রে সুনামের সাথে ব্যবাহার
হয়ে আসলে এটি সাধারণত শক্তি ৩ এক্স ভাল কাজ করে থাকে। রক্তে যদি বিলুরুবিন এর মাত্রা
বেশী থাকে তাহলে এর উচ্চ শক্তি ব্যবহার করতে হয়।
বইওকেমিক
নেট্রাম সালফ : চক্ষু, প্রস্রাব হলুদ, গা বমিবমি,মাঝেমঝে পিত্তবমি,মুখে তিক্ত স্বাধ,সর্বশরীল হরিদ্রা বর্ণ হলে ন্যাট্রাম সালফ ভাল কাজ করে। শক্তি ৬-১২ এক্স দিনে ৩ বার খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে।
ক্যালি মিউর : ঠান্ডা লাগিয়া রোগ উৎপত্তি,কোষ্টবদ্ধ জিহ্বায় সাধা বর্ণের প্রলেপ যুক্ত ময়লা থাকলে অব্যর্থ। শক্তি ৬ এক্স ৪ বড়ি করে ৩ বার খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে।
এছাড়াও আরো কিছু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আছে আমি শুধু জন্ডিসের বেশী বেশী
ব্যবহৃত ঔধষগুলো তুলে ধরেছি।
বিঃদ্রঃ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ কোন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া ঠিক নয় এতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সচেতনতার সাথে ব্যবহার করুন।
