অন্ডকোষের পীড়ায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ (Homeopathic treatment for testicular pain)

Homeopathy Treatment of testes

অন্ডকোষের পীড়া
কারণ সমূহ : প্রমেহ স্রাব বন্ধ হইয়া,ঠান্ডা বা আঘাত লাগিয়া,অধিক চলাফেরা করিয়া কিংবা উপদংশ রোগীদের এই পীড়া অধিক হয়,এক বা উভয় বিচিতে প্রদাহ হইয়া ফুলিয়া টাটানি বেদনা ও জ্বর হয়,অন্ডকোষের থলিতে জল জমিয়া বড় হইলে তাহাকে কোরন্ড রোগ বলে,কোরন্ড রোগে বেদনা বেশী একটা থাকেনা। বেশী ফুললে বরফ বা ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে,ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
নিম্নে বিভিন্ন ধরনের অন্ডকোষের পীড়া সম্পর্কে আলোচনা করা হলঃ
হার্নিয়া বা অন্ত্র বৃদ্ধি:
কারণ সমূহ : পেটের নাড়িভুড়ি অন্ত্র বহির্গত হইয়া দূর্ভাগ্যক্রমে কুচকিতে অন্ডকোষে বা নাভিতে প্রবিষ্ট হয়,তাহাকে হার্ণিয়া বলে,হার্নিয়া কয়েক প্রকার হয় ,যাই হোক বারে বারে ভারী জিনিস উত্তোলন অনেক দিন হাটা,বেশী বেশী বাসি বাজান,কোথ দিয়ে মল ত্যাগ করা,অধিক দিন কাশি,জোরে জোরে ক্রন্দন বা অধিক জোরে হাসা প্রভূতি কারণে হতে পারে।
এপিডিডাইমেটিস
:
অন্ডকোষে
বীর্য জমা
বা রক্ত
জমা বা
পয়জন জমা
ব্যাকটেরিয়া আক্রমন করে
যার ফলে
ইনফেকশন হয়,যার ফলে
ব্যাথা হয়।
ফোলা থাকবে
ও টাচ্
লাগলে ব্যাথা
করবে লক্ষণ
বমি ভাব
বা জ্বর
থাকতে পারে।
অর্কটাইটিস
: ফোলা,ব্যথা ও লাল থাকবে,নড়াচড়
করলে ব্যথা
করবে প্রসাবে
রক্ত আসতে
পারে সহবাসের
ফলে বীর্জের
সাথেও রক্ত
আসতে পারে।
গরম থাকবে।
জ্বর থাকবে।
ভেরিকোসিল:
কারণ
: প্রধানত বাম
অন্ডোকোষে হয়ে থাকে। প্রধানত
আঘাত লাগা।
লক্ষণ পুরুষের
বন্ধাত্ত হয়,ফোলে,ব্যথা
থাকতে পারে
আবার নাও
থাকতে পারে,
বেদনাহীন ঢেলা
বা গাট
দেখা যায়,মনে হবে
কেচো জাড়িয়ে
কুন্ডলী পাকিয়ে
রয়েছে।
অন্ডকোষের পীড়ায় ব্যবহৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সমূহ:
আর্নিকা
মন্টেনা : কোন
প্রকার আঘাত
লাগার ফলে
টাটানি ব্যাথা,শক্ত ও
ফোলায়। শক্তি
৩০ বা
২০০ তিন
ঘন্টা অন্তর
অন্তর ২
ফোটা করে
সামান্য পানির
সাথে মিশিয়ে
সেব্য। মাদার
বাহ্যিক ব্যবহার
করলে শিঘ্র
উপকার হয়।
স্পঞ্জিয়া : বাম অন্ডকোষ অত্যন্ত টাটানি ব্যথা,শক্ত অন্ডকোষের গোড়ার রগ ফুলিয়া মোটা,নড়াচড়ায় ব্যথা বাড়ে,ইত্যাদি লক্ষণে ইহা প্রয়োগ করিয়া বহু রোগী আরোগ্য হইয়াছে। শক্তি ৩০ বা ২০০ তিন ঘন্টা অন্তর অন্তর ২ ফোটা করে সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে সেব্য।
পালসেটিলা
: কোমল মন,প্রমেহ রোগ
চাপা পড়িয়া
বা ঠান্ডা
লাগিয়া অন্ডকোষে
অত্যন্ত বেদনা,ফোলা,নড়চড়ায়
বেদনা বৃদ্ধি
প্রদাহিত স্থান
লাল মাঝে
মাঝে কোমরে
বেদনা ইত্যাদি
লক্ষণে অমোঘ।
শক্তি ৩
এক্স বা
৬ দুই ফোটা ঔষধ সামান্য পানিতে
মিশিয়ে ২-৩
ঘন্টা অন্তর
অন্তর সেব্য।
অরাম
মেট : মনে
নানারুপ দুশ্চিন্তা,উদাসীন,কোন
কোন ক্ষেত্রে
অত্মহত্যার চিন্তা আসে,মেজাজ খিটখিটে,এই ধাতুর
রোগে যদি
জানতে পারেন
রোগীর ডান
অন্ডকোষটি বড় তাহাতে
কোন বেদনা
যন্ত্রণা নাই,তথায় এই
ঔষধ প্রয়োগ
করিতে ভূলিবেন
না,এখানে
আরো একটা
কথা মনে
রাখিবে অন্ডকোষ
যদি ছোট
হতে থাকে
তাতেও অরাম
মেট উপকারে
আসে। শক্তি
৩০-২০০
দিনে ২
মাত্রা উপকার
না হলে
১ এম
সপ্তাহে সকাল
বিকার ২
মাত্রা,পুরাতন
হলে আরো
উচ্চ শক্তি।
ক্লিমেটিস
: ঠান্ডা লাগিয়া
বা প্রমেহ
স্রাব বন্ধ
হইয়া ডান
অন্ডকোষ ফুলিয়া
পাথরের মত
শক্ত,অসহ্য
ব্যথা,যন্ত্রণায়
উপকারী। ব্যথা
রাত্রে বৃদ্ধি
গরমে বৃদ্ধি,ঠান্ডায় উপশম,রোগ অধিক
পুরাতন হলে
তেমন একটা
ব্যথা থাকেনা।
শক্তি ৬-৩০ দিনে
৩ বার
পুরাতন হলে
২০০ বা
১ এম বা ১০ এম সকাল
বিকাল ২
মাত্রা।
রডড্রেনডোন
: অন্ডকোষ শক্ত
টাটানি ব্যথা,সেই ব্যথা
মনে হয়
কেহ যেন
অন্ডকোষটি পিষিয়া চূর্ণ
করিয়া দিতেছে,সুচ ফোটানো
ব্যথা,তলপেট
পর্যন্ত পরিচালিত
হয়,অন্ডকোষের
শ্বাসরুদ্ধকর ব্যথা,আকাশে
মেঘ দেখা
দিলে বা
ঝড় বৃষ্টির
পূর্বক্ষণে মেঘলা দিনে
রোগ যন্ত্রণা
বৃদ্ধি,চলাফেরায়
উপশম,যে
শিশু জন্ম
থেকে অন্ডকোষে
কোরন্ড রোগ
দেখা দেয়,তাহলে একমাত্র
ঔষধ। শক্তি
৬-৩০
তিন ঘন্টা
অন্তর অন্তর, পুরাতন হলে
২০০,১ এম ১০
এম,সি
এম তিন
মাস অন্তর
অন্তর সেবন
করিতে দিয়ে
অনেক রোগী
আরোগ্য হইয়াছে।
কোনিয়াম
: যদি জানা
যায় পূর্বে
কোন এক
সময় অন্ডকোষে
আঘাত লাগিয়া
ছিল এখন
অন্ডকোষ ফুলিয়া
শক্ত ও
ব্যথা হয়
তখন কোনিয়াম
দিবেন। শক্তি
২০০ পুরাতন হলে ১
এম বা
আরো উচ্চ
শক্তি।
হ্যামামেলিস
: অন্ডকোষে টানিয়া
ধরার মত
অত্যন্ত টাটানি
ব্যথা ও
ফুলায় উপকারী।
শক্তি ৩ বা ৩০
তিন ঘন্টা
অন্তর সেবন
ও ইহার
মাদার বাহ্যিক
প্রয়োগ দিতে
হবে।
আয়োডিয়াম
: রাক্ষসে ক্ষুধা,খায়দায় কিন্তু
দিনদিন শুকিয়ে
যায়,ঠান্ডায়
সে ভাল
থাকে গরম
সহ্য করতে
পারেনা,এ
ধরনের রোগীর
যখন অন্ডকোষ
শুকিয়ে যেতে
থাকলে অব্যর্থ।
শক্তি ২০০
সকাল বিকাল ২ মাত্রা,পুরাতন পীড়ায়
১এম বা ১০ এম সপ্তাহ
বা পনের দিন
বা এক
মাস অন্তর
১ মাত্রা।
স্যাবাল
সেরুলেটা : এক
বা উভয়
অন্ডকোষ আস্তে
আস্তে শুকাইয়া
ছোট হইতে
থাকিলে ও
সে সঙ্গে
ধ্বজভঙ্গ পীড়া
দেখা দিলে
উপকারী। শক্তি
মাদার ১০
ফোটা পানিসহ
প্রত্যহ ২
বার কিছু
দিন সেবন
করিলে উক্ত
পীড়া আরোগ্য
হয়।
নাক্স
ভমিকা : খিটখিটে
স্বভাব,অত্যন্ত
রাগী,ঝগড়াটে
পুরুষ, হিংসুক,
কোষ্টবদ্ধের ধাতু,বাম
অন্ডকোষ ফুলিয়া
বড় ও
শক্ত ছিড়িয়া
ফেলার মত
টাটানি ব্যথা
হলে। নাক্স বাম অন্ডকোষের ক্ষেত্রে
বেশী কার্যকর। শক্তি ৩
বা ৬ তিন
ঘন্টা অন্তর,৩০ বা ২০০
আরো উপকারী।
| Homeopathy Treatment of testes images |
ব্রোমিয়ম : এক বা উভয় অন্ডকোষ ফোলে টাটানি বেদনা অত্যন্ত শক্ত ও গরম,চলাফেরা করিলে বাড়ে বা চলাফেরা করিতে পারেনা। শক্তি ৬ বা ৩০ তিন ঘন্টা অন্তর অন্তর সেব্য।
লাইকোপডিয়াম
: ডান দিকের
হার্ণিয়ায় ভাল কাজ
করে,পেটে
বায়ু জমে,
পেট ফুলিয়া
ওঠে,মাঝেমাঝে
খোচা মারা
ব্যথা হয়,পেট ডাকে।
শক্তি ৩০
বা ২০০ দিনে
২ মাত্রা সামান্য পানিসহ খালী
পেটে।
বেলেডোনা
: অত্যন্ত দপদপানি
ব্যথা,চকচকে
লাল,নাড়ি
বাহির হইয়া
ফিরিয়া যাইতে
পারেনা,পেট
সাটিয়া ধরে।
শক্তি ৩
এক্স বা
৬ তিন
চার ফোটা
সামান্য পানির
সাথে মিশিয়ে
১ ঘন্টা
অন্তর অন্তর সেব্য।
প্লামবম
মেট : কোষ্ঠবদ্ধ
গুটলে গুটলে
মল ত্যাগ,এরুপ হার্নিয়া
রোগীর ডান
দিকের হার্নিয়ায়
উপকারী। শক্তি
৩০ বা ২০০
সকাল বিকাল
২ মাত্রা,পুরাতন হলে
উচ্চ শক্তি।
ওপিয়াম
: ভীষণ কোষ্ঠবদ্ধ,দুই তিন
দিনেও পায়খানা
হয় না,যদিও পায়খানা
হয় কালো
গিটলে বলের
মত,এই
ধরনের রোগীর
হার্নিয়ায় উপকারী। শক্তি
৩০ বা ২০০
দিনে ২
মাত্র সামান্য পানিসহ দিনে ২ মাত্রা।
বাইওকেমিক ঔষধ সমূহ:
ফেরাম
ফস : অন্ডকোষ
প্রদাহের প্রথমাবস্থায়
বর্ণ লাল,গরম,চিড়িক
মারা ব্যথা,নড়াচড়ায় যন্ত্রণা
বৃদ্ধিতে উপকারী।
দ্বিতীয় অবস্থায়
উক্ত ঔষধের
সঙ্গে ক্যালি
মিউর পর্যায়ক্রমে
সেবনে আরো
শীঘ্র আরোগ্য
হয়। শক্তি
৬ এক্স
২ ঘন্টা
অন্তর অন্তর খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে।
ক্যালকেরিয়া ফ্লোর : অন্ডকোষ ফোলা থলথলে নরম মনে হয় ভিতরে জল পূর্ণ রহিয়াছে,পুরাতন অবস্থায় পাথরের মত শক্ত থাকিলেও প্রধান ঔষধ, নতুন বা পুরাতন উভয় প্রকার হার্নিয়াতে ভাল কাজ করে। শক্তি ৬ বা ১২ এক্স দিনে ২ মাত্রা,পুরাতন রোগে উচ্চ শক্তি।
বিঃদ্রঃ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ কোন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া ঠিক নয় এতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সচেতনতার সাথে ব্যবহার করুন।
লেখাটি পাড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ নিজে শিখুন এবং কাছের লোকদের লিঙ্ক শেয়ার করুন।
