অনিদ্রার হোমিপ্যাথিক চিকিৎসাঃ (Homeopathic treatment of insomnia)
হোমিওপ্যাথিক ঔষধ এর মাধ্যমে অনিদ্রা আরোগ্য বা উপশোম করা যায়। এর
জন্য প্রয়োজন সঠিক মাত্রায় সঠিক সময় ঔষধ সেবন করা ও নিজের শরীরের যত্ন নিতে হবে যেমন
সময়মত খাওয়া,সময়মত গোসল করা ও ঘুমের সময় সেট করে সেই মোতাবেক প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে
যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠা,নিয়মিত ব্যয়াম বা পরিশ্রম করা। এগুলো মেনে চললে ও নিয়মিত হোমিওপ্যাথিক
ঔষধ সেবন করলে আশা করি কাজ করবে ইনশাআল্লাহ,
অনিদ্রা কেন হয় ?
অনিদ্রা কোন রোগ নয় এটা অন্য রোগের লক্ষণ মাত্র। মানুষের বিভিন্ন
কারনে ঘুমের সমস্যা হতে পারে যেমন,অত্যাধিক চিন্তা ভাবনা,অতিরিক্ত দৈহিক বা মাসিক পরিশ্রম,অধিক চা,কফি,মদ্যপান,গুরুপাক খাবার ভোজন, শোক, তাপ, মানসিক গোলযোগ,মানব দেহের বিভিন্ন
জটিল রোগ ইত্যাদি কারনে ও বৃদ্ধ বয়সে এই রোগ অধিক হয়ে থাকে।
অনিদ্রার হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সমুহঃ
নিম্নে কিছু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ লক্ষণ ভিত্তিক আলোচনা করা হলঃ
কফিয়া : অনুভতিপ্রবণ,মতলববাজ,হঠাৎ মানসিক উত্তেজনা, শীতকাতর, রোগীদের উপকার। রোগী আসিয়া বলিল, ডাক্তার সাহেব আমাকে ঘুমের ঔষধ দিন সারা রাত্র বিছানায় এপাশ ওপাশ করি, মনেনা নানা রকম চিন্তা ভাবনায় ঘুম আসেনা যদি একটু ঘুমায় আবার একটু পরেই জেগে উঠি। শক্তি ২০০ সামান্য ঠান্ডা পানির সাথে
২ ফোটা ঔষধ মিশিয়ে সন্ধায় ও রাত্রে কিছুদিন সেবনে উপকার হবে।
ইগ্নেশিয়া : রোগী অত্যন্ত নির্জনতা প্রিয়,মেজাজ খুবই রুক্ষ, শীতকাতর, অপনি যদি জানতে পারেন কোন শোক বা দু:খ অন্তরে চাপিয়া রেখে দু:খ ভোগ করে দীর্ঘ নি:শ্বাস ফেলে বা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে অনিদ্রায় ভোগে বা ভয় জনিত কারনে ঘুম না হলে খাবেন। শক্তি ৩০ বা ২০০ দিনে দুই মাত্রা, পুরাতন হলে ১এম বা ১০ এম ১ ডোজ খেতে হবে।
ক্যালকেরিয়া কার্ব : মোটা থলথলে মেদপুর্ণ রোগী ঘুমের জন্য আসলে। রোগীর মাথা ঘামে টকযুক্ত গন্ধ ঘামে বালিশ ভিজে যায়,ঠান্ডা লাগার প্রবনতা বেশী,ডিম খাইবার প্রবনতা,শীতকাতর,সারা রাত্র জাগিয়া থাকে একটু শব্দ হলেই জাগিয়া ওঠে,নানা প্রাকার কাল্পনিক স্বপ্ন দেখে। শক্তি ২০০ সামান্য ঠান্ডা পানির সাথে ২ ফোটা ঔষধ মিশিয়ে সাকাল বিকাল ২ মাত্রা
সেবন করতে হবে।
হায়োসিয়ামস : খিটখিটে স্বভাব,শীতকাতর,শিশুর মা আসিয়া বলিলেন আমার ছেলেকে ঘুমের ঔষধ দিন কোন প্রকার ঘুমাতে চায়না,একটু ঘুমাইলে কাপিয়া ওঠে,সমস্ত রাত্রি জাগিয়া থাকে ছটপট করে,কোন কারণ বোঝা যায় না। শাক্তি ৩০ বা ২০০ দুই মাত্রা সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে সেবন করাবেন।
ক্যামোমিলা : বদ মেজাজী,খিটখিটে স্বভাব,সামান্য কিছুতেই ঝগড়া করে,কথায় কথায় রাগিয়া ওঠে,প্রতিবাদ সহ্য হয়না এই সকল রোগীদের ভাল কাজ করে । শিশু কেবল কোলে থাকিতে চায় কাদে কোন জিনিষ হাতে দিলে ফেলে দেয়, মনে হয় রাগিয়া আছে,নিজেও ঘুমায় না অন্যকেও ঘুমাইতে দেয় না। শাক্তি ৩০ বা ২০০ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে
সকাল ও রাত্রে সেবন করাবেন।
চায়না : হতাশা,বিমর্ষ,উৎসাহ শুন্য,উদাসীন ব্যাক্তির অরিরিক্ত রক্ত,বীর্য বা শরীলের তরল পদার্থ ক্ষয়জনিত দুবল রোগীদের অনিদ্রায় মহা উপকারী। শাক্তি ৩ এক্স ৬ চার ফোটা ঠান্ডা পানিসহ ৩ বার সেবন করাবেন আর যদি ৩০ বা ২০০ শক্তি দেন তাহলে সকাল
ও রাত্রে দুই মাত্রা।
প্যাসিফ্লোরা : শিশু,যুবক,বৃদ্ধ যেকোন বয়সের রোগীয় হোক,অনিদ্রার কারন খুজিয়া না পাইলে। প্যাসিফ্লোরা মাদার ১০ ফোটা ঔষধ সামান্য পানি সহ রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে সেবন করিলে উপকার হয়। শিশুদের ডোজ কম দিতে হবে।
এভেনা স্যাটাইভা : অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রম জনিত কারনে যাহারা অনিদ্রায় ভোগে,কিংবা অস্তমৈথুন, স্বপ্নদোষ, অতিরিক্ত স্ত্রী সহবাস করিয়া, অস্বাবিক শুক্র ক্ষয় করিয়া অনিদ্রায় ভোগে তাদের পরম বন্ধু। মাদার ১০ ফোটা করে হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে ৩ বার খাওয়ার পরে সেব্য।
রাউলফিয়া : চিন্তা ভাবনা বা মানসিক উত্তেজনা কিংবা অন্য কোন কারণে অনিদ্রায় কষ্ট পাইতে থাকিলে ইহা উপকারী। শক্তি মাদার ৫ বা ১০ ফোটা ঔষধ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে
বয়স অনুপাতে ২ বার সেব্য।
ককুলাস ইন্ডিকা : কাহারো কোন কারন বসত অনেক দিন পর্যন্ত রাত্রি জাগিয়া থাকার ফলে অনিদ্র হলে উপকারী। শাক্তি ৩০ বা ২০০ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে
সকাল ও রাত্রে সেবন করাবেন।
ক্যালি ফস : স্মৃতি শক্তি যাদের কম অনিদ্রা রোগে উত্তম,অধিক লেখা পড়া করিয়া,নানান কাজে ব্যস্থ থাকিয়া, শোক, দু:খ, ভয় পাওয়ার কারণে, মানসিক অশান্তি,শিশু ঘুমাই না ঘুমাইলে কাপিয়া ওঠে বাকা দিয়া ওঠে। শক্তি ৬ এক্স বা ১২ এক্স ২ বা ৪ বড়ি খাওয়ার পরে ৩ বার সেব্য।
ফেরাম ফস : অত্যধিক ঘুমের জন্য ছাত্রদের লেখা পড়ায় ব্যঘাত ঘটিলে ফেরাম ফস সেবনে ঘুম দুর হইবে। শক্তি ৩ এক্স ২ বা ৪ বড়ি প্রতাহ রাত্রে এক মাত্রা।

