খাদ্যোর উপাদান, পুষ্টিগুন ও উৎস সমুহঃ (Food ingredients, nutrients and sources)

দৈনিক একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের পুষ্টি চাহিদা অনুযায়ী কতটুকু খাদ্য প্রয়োজন?
একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের পুষ্টি চাহিদা তার পরিশ্রম ও দেহের ওজন এর উপর
নির্ভর করে। ক্যালরির ৬০-৭০ শতাংশ নানা প্রকার কার্বোহাইড্রেট থেকে, ২৫-৩০ শতাংশ স্নেহ
জাতীয় পদার্থ থেকে ও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
পুষ্টির চাহিদা অনুযায়ী
কোন খাবার কতটুকু পরিমাণ গ্রহণ করতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলঃ
মানব দেহের শক্তির প্রধান উৎস হল খাবার। সালোকসংশ্লেষণ এর প্রক্রিয়াকালে সৌরশক্তি উদ্ভিজ
খাদ্যের ভিতরে স্হৈতিকক্তিরুপে আবদ্ধ বিদ্যামান। জীবকোষের শ্বসনের
সময় স্থৈতিক শক্তি তাপ শক্তি এবং গতিশক্তি রুপে
মুক্ত হয়, মানব দেহের সকর ধরনের বিপাক ক্রিয়া, যেমন,শসন,রেচন ও পুষ্টি গ্রহণ
ইত্যাদি। শারীর এর যাবতীয় বৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ,
যেমন,বৃদ্ধি,চলা-চল,প্রজনন ইত্যাদি
নিয়ন্ত্রিত হয় থাকে। তাই জীবন ধারণের জন্য প্রত্যেক প্রাণীকেই খাবার গ্রহণ করতে হয়।
যে সব খাবার সামগ্রী গ্রহণ করলে মানব দেহের বৃদ্ধি,পুষ্টি,শক্তি,ক্ষয়পূরন
ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় তাকেই খাদ্য বলে।
খাদ্য উৎসঃ
পৃথীবিতে বেশিরভাগ খাবার উদ্ভব হয় উদ্ভিদ
থেকে। কিছু খাদ্য সরাসরি উদ্ভিদ এর মাধ্যেমে পাওয়া যায়। এমনকি প্রাণির খাদ্যর উৎস
হিসাবে আমরা ব্যবহার করে থাকি। সিরিয়াল নামক
শস্যটি একটি প্রধান খাদ্য যা অন্য যেকোন ফসলের চেয়ে সারাবিশ্বে
বেশি খাদ্যশক্তি উৎস সরবরাহ করে। বিশ্বব্যাপী সকল শস্য উৎপাদনের প্রায় ৮৭ ভাগ
জুড়ে আছে ভুট্টা,গম ও চাউল বা এই জাতীয় উদ্ভিদ থেকে। সারাবিশ্বে
উৎপাদিত বেশিরভাগ শস্যা প্রাণিসম্পদগুলিকে বৃদ্ধি করতে ব্যবহার করা হয়। প্রাণী বা
উদ্ভিদ উৎস নয় এমন কিছু খাবারের মধ্যে বিভিন্ন ভোজ্য ছত্রাক ব্যবহৃত হয়,বিশেষ করে মাশরুম অন্তর্ভু। খামিরযুক্ত ও আচারযুক্ত খাবার
তার মধ্যে যেমন,খামিরযুক্ত রুটি,অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়,পনির,আচার,কম্বুচা ও দই তৈরিতে ছত্রাক
এবং ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার
করা হয়ে থাকে। আর একটি উৎস হল নীল-সবুজ শেওলাযেমন,স্পিরুলিয়া।
অজৈবজাতীয় পদার্থ লবণ,বেকিং সোডা ও টারটার ক্রিম ব্যবহার করে
কোনও উপাদান সংরক্ষণ বা রাসায়নিক ভাবে পরিবর্তিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
উদ্ভিদ থেকে খাবার এর উৎসঃ
সারাবিশ্বে খাদ্য হিসাবে খাওয়ার চাষ করা
হয় প্রায় ২,০০০ প্রজাতির উদ্ভিদ। আবার এই উদ্ভিদগুলোর বিভিন্ন প্রজাতির বিভিন্ন
ধরনের স্বতন্ত্র জাত রয়েছে। মানুষ সহ পৃথীবীর অন্যান্য প্রাণীর জন্য গাছের বীজ হল খাবারের একটি উৎস । এ খাবারগুলো ওমেগা ফ্যাটগুলির মতো বিভিন্ন প্রকার
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সহ উদ্ভিদের প্রাথমিকভাবে বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি বিদ্যামান
থাকে। মানুষের ভোজ্য বেশিরভাগ খাদ্যই বীজভিত্তিক হয়ে থাকে। ভোজ্য বীজের মধ্যে
সিরিয়াল অন্যতম এগুলো বীজ জাতীয় যেমন,মটরশুটি,মসুর ডাল, কলাই ডাল,বাদাম ইত্যাদি । তৈলবীজগুলোকে সমৃদ্ধ তৈল উৎপাদন করতে পিষে নিতে হয় যেমন,সূর্যমুখী,ফ্ল্যাকসিড,রেপিসিড,তিল ইত্যাদি। শাক-স্ববজি ২য়
ধরণের উদ্ভিদজ খাদ্য উৎস যা সাধারণত খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে আলু, গাজর,পেঁয়াজ,লেটুস,বাঁশেরকান্ড,শতমূলী,গ্লোব,আর্টিচোক,ব্রোকলি,বাঁধাকপি,ফুলকপি,রসুন, কাণ্ড,ওল
কপি, মুলা, টমেটা, বেগুন, সিম, পালংশাক,পুইশাক ইত্যাদি।
প্রাণী থেকে খাবার এর উৎসঃ
প্রাণীর মধ্যে যেমন গরু,ছাগল,হাঁস,মুরগী,পায়রা,দুম্বা,মহিষ
ইত্যাদি প্রাণীর মাংস ও চর্বি। প্রাণীর দ্বারা উৎপাদিত পণ্যগুলির মধ্যে প্রাণী
উৎপাদিত দুধ,পনির,মাখন।
এছাড়াও পাখি ও অন্যান্য প্রাণী যারা ডিম দেয়। মৌমাছিরা মধূ সংগ্রহ করে যা
জনপ্রিয় মিষ্টি খাদ্য।
![]() |
| খাদ্যোর ৬ টি উপাদান |
খাদ্যের উপাদানঃ
খাদ্যের ৬টি উপাদানঃ, যথা-
১। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ।
২। আমিষ বা প্রোটিন।
৩। স্নেহপদার্থ (কার্বন, হাইড্রোজেন, এবং অক্সিজেন) ।
৪। ভিটামিন বা
খাদ্যপ্রাণ।
৫। খনিজ লবণ।
৬। পানি।
১। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ঃ
২। আমিষ বা প্রোটিনঃ
মানব দেহের বৃদ্ধি,কোষ গঠন এবং ক্ষয়পূরণ করা প্রোটিনের প্রধান কাজ। তাপ শক্তি উৎপাদন এবং হরমোন ব্যালেন্স করে থাকে। কার্বন, হাইড্রোজেন,অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন এর সমন্বয়ে প্রোটিন গঠিত হয়। প্রোটিন-অণুতে অনেক বেশী অ্যামাইনো অ্যাসিডের সমন্বয় হয়ে থাকে। মাছ,মাংস,দুধ,ডিম,ডাল,সয়াবিন,গম ছানা,বীন,উদ্ভিজ্জ ইত্যাদি খাবারে আমিষ বিদ্যামন। প্রাণিজ প্রোটিন এ অ্যামাইনো এসিড প্রায় সকল খারারে থাকে যার ফলে প্রাণিজ প্রাটিনকে প্রথম শ্রেণির প্রোটিন বলা হয়ে থাকে।প্রোটিনকে আবার ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
![]() |
| প্রাণীজ উৎস |
৩। স্নেহপদার্থ বা ফ্যাটঃ
ফ্যাট সাধারনত দুই ধরনের হয়। যথা:
১. সরল ফ্যাট যেমন,ওয়াক্স বা মোম, ল্যানোলিন ইত্যাদি সরল ফ্যাট।
২. যৌগিক ফ্যাট যেমন, ফসফোলিপিড,অ্যামাইনো-লিপিড,গ্লাইকোলিপিড ইত্যাদি।
৪। খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন :
খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন দুভাগে ভাগ করা হয়। যথা:
৫। খনিজ লবণঃ
৬। পানিঃ
লেখাটি পাড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ নিজে জানুন এবং অপরের কাছে লিঙ্ক শেয়ার করে অন্যদেরকে জানতে সাহায্য করুন।

