Homeopathic treatment of dysentery: (আমাশয় রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ)

Homeopathic treatment of dysentery

আমাশয় রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
সাধারণত জীবাণু ও পরজিবী সংক্রমণের ফলে আমাশয় হয়ে থাকে। তীব্য পেট ব্যাথা,জ্বরজ্বর ভাব ও জ্বর থাকে,বমিবমি ভাব অথবা বমি হয়,পুন: পুন: শ্লেষ্মাযুক্ত কিংবা রক্ত মিশ্রিত অল্প মলত্যাগ,কুন্থন,পেটে শূল বেদনা,ইহা বৃহদন্ত্রের রোগ
আমাশয় রোগের কারণ সমূহঃ
অপরিস্কারযুক্ত
খাবার, ঠান্ডা লাগা,বাসি কিংবা পঁচা মাছ মাংস খাওয়া, দূষিত পানি পান করা,আবহাওয়ার পরিবর্তন, সংক্রমিত মানুষের মাধ্যেমে,বেশী করে কাঁচা ফলমুল খাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে আমাশয় হয়ে থাকে। আমাশয় রোগে বার্লি, শিংমাছ, কাচাঁকলা,পাকা ও কাচা বেল খেলে উপকার হয়।
আমাশয় রোগের হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সমূহঃ
হোমিওপ্যাথিক
ঔষধ এর দ্বারা প্রায় যে কোন রোগের স্থায়ী সমাধান করা যায় তাই লক্ষণ মিলিয়ে হোমিওপ্যাথিক
ঔষধ নিয়মিত কোন ডাক্তার এর পরামর্শ করে সেবন
করুন। আশা করি রোগ আরগ্য হবে ইনশাল্লাহ। নিম্নে আমাশয় রোগের ঔষধগুলোর লক্ষণ ভিত্তিক
আলোচনা করা হলঃ
একোনাইট ন্যাপঃ সর্ব প্রকার আমাশয়ের প্রথমাবস্থায় ও দ্বিতীয় অবস্থায় শ্বেত বা রক্ত বর্ণের আমাশয় ঘনঘন বাহ্যের বেগ,অল্প অল্প পায়খানা হয়,কুন্থন ইত্যাদি কারনে একোনাইট ভাল ফলাফল দিয়ে থাকে। শক্তি ৩ এক্স বা ৩০ একটু ঘনঘন সেবন করলে রোগ দ্রুত ভাল হয়।
কলোসিস্থঃ ঘনঘন পায়খানার চাপ হলুদ বর্ণের মলের সহিত আমরক্ত,মাঝে মাঝে পেটে অত্যন্ত বেদনা হয়ে থাকে,সেই ব্যাথা চাপিয়া ধরিলে আরাম হলে কলোসিন্থ ব্যবহার করবেন । শক্তি ৩ এক্স ৩ ফোটা ঔষধ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে ৩ ঘন্টা অন্তর অন্তর সেব্য করিবেন।
নাক্স ভুমিকাঃ হিংসুটে,বদমেজাজী স্বভাব,শীতকারত রোগী ক্রমাগত পায়খানার বেগ লেগেই থাকে, পরিমানে পায়খানা স্বল্প তার সাথে রক্তমিশ্রিত আমাশয়, কখনও কখনও সাদা আম,আবার কখনও শুধু রক্ত পড়ে। পেট ব্যথা করে পায়খানার চাপ হয় কিন্তু মল ত্যাগ করার পর ব্যথা থাকেনা। শক্তি ৩ এক্স ৩ ফোটা ঔষধ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে ৩ ঘন্টা অন্তর অন্তর সেবন করিবেন। ৩০ বা ২০০ শক্তি আরো বেশী উপকারী হয়ে থাকে।
মার্কুরিয়াস সলঃ আমাশয় রোগের উৎকৃষ্ট ঔষধ হল মার্কসল,ঘনঘন পায়খানার চাপ,অধিক কোঁথানী,বাহ্যের পূর্বে ও পরে পেট শূলনী করে ব্যথা করে,থানা থানা আম পড়ে, সাথে মাঝে মাঝে স্বল্প রক্ত মিশ্রিত মল ত্যাগ করে,আমশয় পীড়ায় কোঁথানী ও আমের ভাগ বেশী হলে আরোগ্য হয়ে থাকে। শক্তি ৩ এক্স ৩ ফোটা ঔষধ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে ৩ ঘন্টা পর পার সেব্য করিবেন। ৩০ বা ২০০ শক্তি ব্যবহারে করলে বেশী উপকার পাবেন।
ক্যালি নাইটঃ অত্যন্ত দূর্বল রোগী,হাত ও পা ঠান্ডা শীতকাতর এই ধরনের রোগীর ঘনঘন মলত্যাগের বেগ থাকে,রক্ত মিশ্রিত মল ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলে ক্যালি নাইট প্রযোজ্য, একোনাই দিয়া যদি আমাশয় না আরোগ্য হয় তাহলে ক্যালি নাইট প্রয়োগ করলে রোগী সম্পুর্ণ আরোগ্য হয় ইনশাআল্লাহ। শক্তি ৩ এক্স ২ ফোটা ঔষধ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে ৩ ঘন্টা অন্তর অন্তর সেবন করিবেন।
এলোজঃ হলুদ রং মল সাথে থলথলে রক্ত মিশ্রিত আম,মল কখনও অল্প কখনও বেশী,মলদ্বার অসাড় হয়ে থাকে,সময় সময় বায়ু বাতাসের সাথে মল বাহির হয়ে পড়ে,মলত্যাগের পূর্বে পেট খুব ডাকে,প্রসব করতে গেলে খুব সাবধানে করতে হয়, অসাড়ে পায়খানায় এলাজ প্রধান পরিচয় দেয়। শক্তি ২০০ তিন ঘন্টা পরপর ২ ফোটা ঔষধ সামান্য ঠান্ডা পানির সাথে মিশিয়ে সেবন করবেন।
মার্কুরিয়াস করঃ আমাশয় রোগে রক্তের ভাগ বেশী থকালে,আমাশয় অল্প,মাঝে মাঝে শুধু রক্ত পড়ে ঘনঘন পায়খানার বেগ থাকে,পেটে অত্যন্ত যন্ত্রণা দায়ক বেদনা অনুভব করে, অধিক কোঁথানী ইত্যাদি লক্ষণে বেশী উপকারী। শক্তি ৩ এক্স ৩ ফোটা ঔষধ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে ৩ ঘন্টা অন্তর অন্তর সেবন করিবেন।
পেট্রোলিয়ম ও ইপিকাকঃ শিশুদের আমাশয় রোগের উৎকৃষ্ট ঔষধ,আমযুক্ত ফেনাফেনা হলুদ বর্ণের মল মাঝে মাঝে শুধু রক্ত পড়ে, বমি বা বমিবমি ভাব এই দুটি ঔষধ পর্যায়ক্রমে ব্যবহারে আমাশয় দ্রুত আরোগ্য হয়। শক্তি ৩০ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে
একটু ঘনঘন সেবনে উপকার হয়।
কলচিকামঃ ঘনঘন পায়খানার বেগ থলথলে আমের সাথে রক্ত পড়ে,মাঝে মাঝে শুধু রক্ত পড়ে, পেট ফোলাফোলা পেটে শূলনী ব্যাথা বাহ্যেতে কোঁথানী বেশী রোগী খাদ্যর গন্ধ সহ্য করতে পারেনা বিভিন্ন লক্ষণে উপকারী। শক্তি ২০০ তিন ঘন্টা অন্তর অন্তর ২ ফোটা ঔষধ সামান্য ঠান্ডা পানির সাথে মিশিয়ে সেবন করিবেন।
ক্যাপ্সিকামঃ মলের সাথে রক্ত মিশ্রিত সবুজ বর্ণের আমাশয়,মল ত্যাগের পরেও মলদ্বারে জ্বালা ও পায়খানার বেগ থাকে,পিপাসায় জল পান করলে শীত রোধ করে ইত্যাদি লক্ষণে ক্যাপ্সিকাম ঔষধটি অধিক উপকারী। শক্তি ৩০ তিন পরপর ৩ ফোটা ঔষধ সামান্য ঠান্ডা পানির সাথে মিশিয়ে সেবন করিবেন।
কুর্চিঃ এটি আমাদের দেশিয় ঔষধ রক্ত আমাশয় এর জন্য অনেক বেশী কার্যকর। শক্তি মাদার 5 ফোটা ঔষধ সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে দিনে ৩ বার সেবন করিবেন কিছু অধিক দিন ব্যবহার করতে হয়।
বাইওকেমিক ঔষধ সমূহঃ
আমাশয় রোগের বাইওকেমিক ঔষধ সমুহ উপরুক্ত ঔষধ এর সাথে সেবন করলে রোগ দ্রুত আরোগ্য হয়ে থাকে। নিম্নে বাইওকেমিক ঔষধ এর আলোচনা করা হয়ঃ
ফেরাম ফসঃ আমাশয় রোগের প্রথমাবস্থায় ঘনঘন পায়খানার বেগ সাথে আম বা রক্ত মিশ্রিত মলত্যাগ কালীন কুন্থন ইত্যাদি লক্ষণে ফেরাম ফস উপকারী, পীড়ার দ্বিতীয়াবস্থায় শ্বেত বর্ণের জিহ্বা রোগীর উক্ত ঔষধের সাথে ক্যালি মিউর পর্যায়ক্রমে সেবন করিলে আমাশয় পীড়া দ্রুত আরোগ্য হয়। শক্তি ৬ এক্স বা ১২ এক্স ৪-৬ বড়ি ২ ঘন্টা অন্তর অন্তর চুষে বা চাবিয়ে খাবেন।
ক্যালকেরিয়া সালফঃ পুরাতন আমাশয় রোগে মলত্যাগের কোঁথানী ও অল্প শ্লেষ্মা রক্ত বা পুজের মত মলত্যাগ করিলে পর্যায়ক্রমে সেবন করলে রোগী আরোগ্য হয়। শক্তি ১২ এক্স ৩০ এক্স ৪ বড়ি করে ৩ বার কিছু দিন সেবন করতে হবে।
বিঃদ্রঃ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ কোন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া ঠিক নয় এতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সচেতনতার সাথে ব্যবহার করুন।
লেখাটি পাড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ নিজে জানুন এবং অপরের কাছে লিঙ্ক শেয়ার করুন।